মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর তিন দিনের মাথায় হবে আইপিএলের নিলাম, অর্থাৎ এরই মধ্যে যাদের দলে নেয়ার কথা ভেবেছে ফ্র্যাঞ্চাইজগুলোর ম্যানেজমেন্ট তাদের ছাড়া আরো নারী ক্রিকেটাররা নজর কাড়ার সুযোগ পাবেন অন্তত তিন দিন। ক্রিকেট লেখক সাজ্জাদ খান আশা করছেন, অন্তত দু’জন বাংলাদেশ থেকে নারীদের আইপিএলে ডাক পাবেন।
তিনি বলেন, সালমা খাতুন, বিশ্বের সেরা স্পিনারদের একজন। তিনি ডাক পেতে পারেন সাথে আরো একজনকে ডাকতে পারে।
মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) মাঠে নামবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় শুরু হবে খেলা। বাংলাদেশ এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘এ’-তে আছে। এ গ্রুপে আছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কা।
ক্রিকেট লেখক সাজ্জাদ খান মনে করেন, এটা একটা কঠিন গ্রুপ, বাংলাদেশ গত তিন আসরে কোনো ম্যাচেই জিততে পারেনি। তাই তিনি খুব বেশি প্রত্যাশা রাখছেন না। তবে তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের উচিৎ অন্তত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পাওয়া।
তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর যদি আরো একটি ম্যাচ জিতে যেতে পারে, তাহলে সেটাই সফলতা ধরে নেয়া হবে এই টুর্নামেন্টে।’
বাংলাদেশ দলে যাদের ওপর থাকবে নজর
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের পরিচিত মুখ সালমা খাতুন, জাহানারা আলমরা আছেন। সাথে এবারে অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে তিনজন গেছেন, যারা আশার আলো ছড়াচ্ছেন। কিছুদিন আগেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
দারুণ এক প্রথম পর্ব কাটিয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্বর্ণা আক্তার বিশ্বকাপের সেরা একাদশেও সুযোগ পেয়েছিলেন।
ক্রিকেট লেখক সাজ্জাদ খান মনে করেন যে মুর্শিদা খাতুন, ফারজানা হক পিংকি ব্যাটিংয়ে এবং মারুফা, জাহানারা বোলিং বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।
তবে তিনি মনে করেন যেহেতু আইপিএলের মতো বড় একটা সুযোগ নারীদের সামনে এসেছে, ‘এখন সবাই শো করতে চাইবে নিজেদের সামর্থ্য।’
বাংলাদেশের জন্য ‘বড় বুস্ট হবে আইপিএল নিলাম’
এবারই প্রথমবারের মতো উইমেন্স আইপিএল, অর্থাৎ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের নারী ভার্সন শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিপুল অর্থে বিক্রি হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজ ও টেলিভিশন সম্প্রচার স্বত্ত্ব।
ক্রিকেট লেখক সাজ্জাদ খান মনে করেন, এটা ক্রিকেটারদের জন্য একটা বড় ‘বুস্ট’ হিসেবে আসবে।
তিনি বলেন, ‘নারী ক্রিকেটারদের বেতন ও অন্য সুযোগ-সুবিধা খুব ভালো নয়। এক্ষেত্রে আইপিএল একটা ভিন্নতা নিয়ে আসবে। আরো বেশি ক্রিকেটার এখানে আসার কথা ভাববে, অর্থনৈতিক প্রণোদনা একটা বড় ব্যাপার।’
কেমন দাম হাঁকা হচ্ছে খেলোয়াড়দের?
৪০ লাখ রুপির ক্যাটাগরিতে আছেন বাংলাদেশের সালমা খাতুন ও রুমানা আহমেদ। নিগার সুলতানা, জাহানারা আলম, নাহিদা আক্তার, লতা মণ্ডল, সোবহানা মোস্তারি ও রিতুমনি আছেন ৩০ লাখ রুপির ক্যাটাগরিতে। সদ্যই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে পারফর্ম করা স্বর্ণা আখতারও আছেন ২০ লাখ রুপির ক্যাটাগরিতে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট লেখক ফিরদোস মুন্ডা জানিয়েছেন, ‘দেখেন প্রথম নারী আইপিএল নিলামে ১২ কোটি রুপি খরচ করবে দলগুলো। পুরুষদের আইপিএলের তুলনায় প্রায় আটগুণ কম খরচ হবে।’
তবুও এটাকেই বড় ‘অর্থনৈতিক বুস্ট’ বলছেন ফিরদোস মুন্ডা। এটাকে শুধু আর্থিকই না সামগ্রিকভাবে নারী ক্রিকেটারদের সামর্থ্যের স্টেটমেন্ট হিসেবে দেখতে চাইছেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের নারী ক্রিকেটার সোফি ডিভাইন মনে করেন, ‘এটা নারী ক্রিকেটের জন্য একটা বড় যাত্রার শুরু।’