ম্যাচের আগেই সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেছিলেন, নেপালের সাথে প্রথম ম্যাচে জিতে ফাইনালের পথে এগিয়ে থাকতে চান। পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করেছেন মাঠে। আজ কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবলে ফাইনালের পথে এগিয়ে থাকলো বাংলাদেশ। দলের হয়ে জোড়া গোল করেছেন সাগরিকা।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে নেপালের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে পুরোটা সময়। এই ম্যাচে দারুণ পারফরম্যান্স করে নজর কেড়েছেন সাগরিকা।
ম্যাচের পাঁচ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বাংলাদেশ। স্বপ্না রানীর ফ্রি-কিক গোলরক্ষক ঝাপিয়ে রক্ষা করেন। নেপালের গোলরক্ষক সুজাতা তামাংয়ের হাতে লেগে দিক বদলে বারে লেগে বল প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে মুনকি আক্তার বল জালে জড়াতে চেষ্টা করলেও তার শট ডিফেন্ডাররা আটকে দেন।
দুই মিনিট বাদেই আবারও আক্রমণ শানায় বাংলাদেশ। বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন মুনকি আক্তার। তবে নেপালের গোলরক্ষক এগিয়ে এসে তাকে থামান। ম্যাচের ১৪ মিনিটে বক্সের মধ্যে বল পান পূজা দাস। তার মাটি কামড়ানো শট অল্পের জন্য পোষ্ট ঘেঁষে বেরিয়ে গেলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। ১৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেয়া পূজার বা পায়ের শট ক্রসবার ঘেষে বাইরে চলে যায়।
৩৮ মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। গোলকিক থেকে বল পান স্বপ্ন রানী। তার হেডে বক্সের কাছাকাছি দুই ডিফেন্ডারের মাঝে বল পান সাগরিকা। দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে আগুয়ান গোলরক্ষকের উপর দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি।
ব্যবধান দ্বিগুণ করতে সময় নেয়নি বাংলাদেশ। ৪২ মিনিটে মুনকি আক্তারের দর্শনীয় গোলে ২-০ তে লিড নেয় স্বাগতিকরা। বক্সের ভেতর বল ক্লিয়ার করতে এগিয়ে আসেন নেপালের গোলরক্ষক সুজাতা। তবে তার ক্লিয়ার করা বল পান ইতি খাতুন; ক্রস দেন মুনকি আক্তারকে। বুদ্বিদীপ্ত শটে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। প্রথমার্ধে ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো বাংলাদেশের। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। বক্সের ভেতর সাগরিকাকে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিকে গোল করতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক আফিদা খন্দকার। তার শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। তবে ফিরতি বলও জালে পাঠাতে পারেননি সাগরিকা। শেষ পর্যন্ত দুই গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় দুই দলই। ৫২ মিনিটেই এক গোল শোধ করে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় নেপাল। সুকরিয়া মিয়ার গোলে ব্যবধান কমায় নেপাল। তবে লিড বাড়িয়ে নিতে খুব বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশ। ৫৬ মিনিটে সাগরিকার গোলে ব্যবধান ৩-১ করে সাইফুর বারী টিটুর শিষ্যরা। বাকিটা সময় দুই দলই বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করলেও শেষ পর্যন্ত স্কোর লাইনে বদল আনতে পারেনি কোনও দল।
পরের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। এদিকে, দিনের প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ১০-০ গোলে হারিয়েছে তারা।