গত বছরের মে মাসে শ্রীলঙ্কা সিরিজে বাংলাদেশ দল থেকে বাদ পড়ায় অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘নো মোর ক্রিকেট…’ লিখে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু এমন অবসর চাননি রুমানার মা। তিনি চেয়েছিলেন, সামাজিক মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে নয়, মাঠ থেকেই বিদায় বলুক মেয়ে।
এরপর মায়ের ইচ্ছাতেই রুমানা নতুন উদ্যমে ফেরার লড়াই শুরু করেন। এবারের মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সেরা খেলোয়াড় হন। ৬ ইনিংসে ব্যাট করে ২৪১ রানের পাশাপাশি ৯ ইনিংসে বল করে নিয়েছেন ১৭টি উইকেট। দাপুটে এই পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবেই প্রায় দেড় বছর পর আবারও জাতীয় দলে ডাক পান রুমানা আহমেদ।
অবশ্য ৩৩ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। সবশেষ ওয়ানডে খেলন ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে। লম্বা সময় জাতীয় দলের বাইরে থাকা অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদ এ মাসে শ্রীলঙ্কায় শুরু হতে যাওয়া নারী এশিয়া কাপ দিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন। মূলত: মাকে খুশি করতেই ঢাকা লিগে পারফরমেন্স দিয়ে ফেরার লড়াই শুরু করেন রুমানা আহমেদ। রুমানা জানান, ’আমি বাদ পড়ার পর মা-ই সবচেয়ে বেশি সাহস জুগিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন। আমার মধ্যে খেলা ছাড়ার একটা মানসিকতা চলে এসেছিল। মা আমাকে বুঝিয়েছেন, এভাবে কেন, মাঠে থেকে তোমাকে খেলা ছাড়তে হবে।’
জাতীয় দল থেকে বাদ পরার পর একপর্যায়ে অনুশীলনও বন্ধ করে দিয়েছিলেন রুমানা। মায়ের এই অনুপ্রেরণাই ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন রুমানা। তাছাড়া আগামী অক্টোবরে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সবশেষ ২০১৪ সালে ঘরের মাঠের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে ছিলেন তিনি। ১০ বছর পর ঘরের মাঠে হতে যাওয়া আরেকটি বিশ্বকাপে খেলার আগ্রহও তাঁর ফেরায় বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে, ‘ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, এটাও বড় অনুপ্রেরণা। আমাদের নিজেদের সমর্থন থাকবে। একটা আশাও থাকবে। খেলোয়াড় হিসেবে আপনি সেটার অংশ হতে চাইবেন।’
এরপর থেকেই জাতীয় দলে ফেরার সংকল্প নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেন রুমানা। অবশ্য জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে রুমানাকে সাহায্য করেছে অভিজ্ঞতাও। তিনি জানান, ‘আবারও জাতীয় দলে ফিরতে পারব, এই বিশ্বাসটা এসেছে আমার অভিজ্ঞতা থেকে। আমি যে অবস্থায় ছিলাম, সেখান থেকে ভেঙে পড়াটা খুব সহজ ছিল। আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি।’