বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কাউর। সে কারণে মাঠেই তিনি অভব্য আচরণ করেছিলেন। এই আচরণের জন্য ভারতের নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ককে শাস্তি পেতে হয়েছে। সমালোচিতও হন হরমনপ্রীত। মহিলাদের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটারের ওই আচরণে বিস্মিত বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা।
নিগার সেদিনের ঘটনা নিয়ে বলেছেন, ‘‘বিষয়টা শুধু খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। সেটা আমাকে বেশি অবাক করেছিল। হরমনপ্রীত নারী ক্রিকেটে একজন কিংবদন্তি। আমার দলের ক্রিকেটারেরাও ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। ওর মানের একজন ক্রিকেটার কীভাবে ওরকম আচরণ করতে পারে! আমরা ওকে দেখে শুধু অবাক হইনি, হতাশও হয়েছিলাম। বিষয়টা আমাকে কষ্ট দিয়েছে।’’
আম্পায়ারিং নিয়ে তৃতীয় ওয়ানডেতে হরমনপ্রীতের অভিযোগও মানতে পারছেন না বাংলাদেশের মহিলা দলের অধিনায়ক। নিগার বলেন, ‘‘একই আম্পায়ারেরা টি-টোয়েন্টি সিরিজ়েও ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন। সেই সিরিজ় ভারত জিতেছিল। সেই সিরিজ়েও যথেষ্ট হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা আরও একটু ভাল খেললে জিততেও পারতাম। তখন কিন্তু ভারতীয় দল কোনও অভিযোগ করেনি আম্পায়ারিং নিয়ে। ওরা জিতেছিল বলেই কি অভিযোগ করেনি? খেলোয়াড় হিসাবে আমি মনে করি আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং তাঁদের সিদ্ধান্ত সম্মান করা উচিত। তৃতীয় এক দিনের ম্যাচে ভারত জিতলেও কি আম্পায়ারিং নিয়ে ওরা এত অভিযোগ করত? ওরা সিরিজ় জিততে পারেনি বলেই হয়তো আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। হতে পারে হতাশার থেকেই এরকম করেছে হরমনপ্রীত।’’ ভারতীয় দলের অধিনায়কের সেই আচরণ এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না তাঁর।
নিজে আউট হওয়ার পরে স্টাম্প ভেঙেছিলেন হরমনপ্রীত। পুরস্কার দেওয়ার সময় এবং ছবি তোলার সময়ও অভব্যতা চালিয়ে গিয়েছিলেন। ট্রফি নিয়ে দু’দলের ক্রিকেটারেরা যখন ছবি তুলছিলেন, তখন তিনি ভদ্রতার সীমা ছাড়িয়ে বলেছিলেন, আম্পায়াররাও আসুক, ওঁরা তো বাংলাদেশ দলেরই অংশ। হরমনপ্রীতের আচরণে বিস্মিত নিগার দল নিয়ে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। ম্যাচের পরেই ভারতীয় দলের অধিনায়কের সমালোচনা করেছিলেন নিগার। তাঁকে বেশি হতাশ করেছিল হরমনপ্রীতের মতো ক্রিকেটার এই রকম আচরণ করায়।
সেই আচরণের জন্য হরমনপ্রীতের ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ জরিমানা হয়েছে। দু’টি ম্যাচ নির্বাসিত হয়েছেন তিনি। আগামী ২৪ মাসের মধ্যে আবার এমন আচরণ করলে আরও কড়া শাস্তি পেতে হবে তাঁকে। শুধু বাংলাদেশের ক্রিকেট মহল নয়, হরমনপ্রীতের সমালোচনা করেছেন ভারতের একাধিক প্রাক্তন ক্রিকেটারও। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও অসন্তুষ্ট। বোর্ড সভাপতি রজার বিন্নী এবং সচিব জয় শাহ কথা বলবেন হরমনপ্রীতের সঙ্গে।